বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডি হ্যাক হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়েছে। আজ মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাতে এই ঘটনা ঘটে, যা রাজনৈতিক মহলে নতুন করে জল্পনা তৈরি করেছে। রাষ্ট্রপতির নিজের আইডি থেকেই পোস্ট করে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে, তবে তার এক মিনিট আগে আসা একটি রহস্যজনক পোস্ট ঘটনাটিকে আরও চাঞ্চল্যকর করে তুলেছে।
**ঘটনার বিস্তারিত:**
জানা যায়, আজ রাত ৭টা ২৯ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডি থেকে একটি রহস্যজনক স্ট্যাটাস দেওয়া হয়। সেখানে শুধু হ্যাশট্যাগ দিয়ে লেখা ছিল, ‘Resignation.’ (পদত্যাগ)। এই পোস্টটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে এবং এটি নিয়ে যখন আলোচনা শুরু হয়, ঠিক তার এক মিনিট পর, অর্থাৎ রাত ৭টা ৩০ মিনিটে একই আইডি থেকে আরেকটি পোস্ট করা হয়। এই পোস্টে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু নিজেই লেখেন, ‘আমার ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়েছে। সকলের অবগতির জন্য বিষয়টি জানানো হল।’
এই দ্রুত ঘটনাপ্রবাহ থেকে স্পষ্ট যে, হ্যাকাররা রাষ্ট্রপতির আইডি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর প্রথমে পদত্যাগের ইঙ্গিত দিয়ে একটি পোস্ট দেয় এবং দ্রুতই প্রকৃত ব্যবহারকারীর পক্ষ থেকে আইডি হ্যাক হওয়ার বিষয়টি জানিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি দূর করার চেষ্টা করা হয়।
**রাষ্ট্রপতির রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট:**
মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। এরপর থেকে তিনি স্বপদেই বহাল আছেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরও তিনি তার পদ ধরে রেখেছেন।
রাষ্ট্রপতির এই পদ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে দীর্ঘদিন ধরেই নানা গুঞ্জন ও সমালোচনা চলছে। বিশেষ করে, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে তাকে তার পদ থেকে অপসারণের দাবি জানানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকার তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এমন এক সময়ে রাষ্ট্রপতির ফেসবুক আইডি হ্যাক হওয়া এবং ‘Resignation’ হ্যাশট্যাগ সম্বলিত পোস্ট আসা, ঘটনাটিকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলেছে।
**প্রভাব ও পরিণতি:**
রাষ্ট্রপ্রধানের একটি ভেরিফায়েড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আইডি হ্যাক হওয়া অত্যন্ত গুরুতর একটি বিষয়, যা দেশের নিরাপত্তা এবং ভাবমূর্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে, এমন একটি স্পর্শকাতর রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যখন তার পদত্যাগ নিয়ে আলোচনা চলমান, তখন ‘Resignation’ হ্যাশট্যাগ সম্বলিত পোস্ট জনমনে মারাত্মক বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে এবং দেশের ভেতরে ও বাইরে ভুল বার্তা দিতে পারে।
কর্তৃপক্ষ দ্রুত বিষয়টি তদন্ত করে হ্যাকারদের শনাক্ত করবে এবং রাষ্ট্রপতির ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে বলে আশা করা যায়। একই সাথে, এই ঘটনা বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কী প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলে দেবে। এই ঘটনার পর রাষ্ট্রপতির কার্যালয় বা সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি আসে কিনা, সেদিকেই এখন সকলের দৃষ্টি।



