**ভিপি-এজিএস শিবিরের আর আধিপত্য বিরোধী ঐক্যের জিএস**
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা: একটি মিশ্র নেতৃত্বের সূচনা**
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের বহু প্রতীক্ষিত ফলাফল গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতে ঘোষণা করা হয়েছে। দীর্ঘ ২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনকে ঘিরে ক্যাম্পাসে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছিল। ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, ভিপি (ভাইস প্রেসিডেন্ট) ও এজিএস (সহকারী সাধারণ সম্পাদক) পদে ছাত্র শিবিরের সমর্থনপুষ্ট সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে, জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে জয় লাভ করেছেন আধিপত্য বিরোধী ঐক্যের প্রার্থী। এই ফলাফল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক ও আদর্শিক অবস্থানের এক মিশ্র প্রতিফলন বলে অনেকে মনে করছেন।
নির্বাচনে ভিপি পদে ছাত্র শিবিরের সমর্থনপুষ্ট সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী **মোস্তাকুর রহমান জাহিদ** ১২ হাজার ৬৮৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার এই বিজয় ক্যাম্পাসে শিবিরের ছাত্র রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
তবে জিএস পদে সবাইকে চমকে দিয়ে আধিপত্য বিরোধী ঐক্য প্যানেলের প্রার্থী **সালাউদ্দিন আম্মার** ১০ হাজার ৫৭০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এই ফলাফল রাকসুতে একটি ভিন্ন মতাদর্শের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করেছে, যা ছাত্র রাজনীতির বৈচিত্র্যকে তুলে ধরে।
এজিএস পদেও ছাত্র শিবিরের সমর্থনপুষ্ট সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী **এস এম সালমান সাব্বির** জয়লাভ করেছেন। তিনি ৬ হাজার ৯৭১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, যা তার জোটের সামগ্রিক সাফল্যের একটি অংশ।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর রাত থেকে পর্যায়ক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি হলের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। প্রতিটি হলের ফলাফল ঘোষণা শেষে সামগ্রিক ফল প্রকাশ করা হয়, যার মাধ্যমে দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটে।
রাকসুতে এই মিশ্র নেতৃত্বের আগমন শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ভিপি ও এজিএস পদে শিবিরের সমর্থনপুষ্ট প্যানেলের জয় এবং জিএস পদে আধিপত্য বিরোধী ঐক্যের বিজয় প্রমাণ করে যে শিক্ষার্থীরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে একটি বহুমুখী প্রতিনিধিত্ব বেছে নিয়েছেন। আশা করা হচ্ছে, নব নির্বাচিত এই নেতৃত্ব রাকসুর কার্যক্রমকে গতিশীল করবে এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কার্যকর ভূমিকা রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক উন্নয়নে অবদান রাখবে। এই কমিটি আগামী দিনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে সচেষ্ট হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সকলে প্রত্যাশা করছেন।

