দীর্ঘ এক যুগ পর প্রকৃতির খেয়াল বোঝা বড় দায়। ঠিক তেমনই এক অপ্রত্যাশিত ঘটনার সাক্ষী হলো ব্রাহ্মণবাড়িয়া। দীর্ঘ এক যুগ পর আবারও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও বিজয়নগর উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে গেল এক বিধ্বংসী টর্নেডো। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে এই টর্নেডো আঘাত হানে, যা স্থানীয়দের মনে সৃষ্টি করেছে এক মিশ্র অনুভূতি – আতঙ্ক আর বিস্ময়।
বিশেষ করে সদর উপজেলার পাঘাচং ইউনিয়ন ও বিজয়নগর উপজেলার কাইজলা বিল এলাকা এই টর্নেডোর সরাসরি শিকার হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বিবরণ থেকে জানা যায়, বিকেল ৫টার দিকে আকাশ হঠাৎ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে এবং গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। আবহাওয়া তখনো কিছুটা গরমভাব ছিল, তাই এমন ভয়াবহ টর্নেডো যে আঘাত হানতে পারে, তা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি।
কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা আকাশে এক ঘূর্ণি বাতাসের চিত্র দেখতে পান, যা দ্রুত কাইজলা বিল ও পাঘাচং এলাকার ওপর দিয়ে বয়ে যায়। টর্নেডোর ভয়াবহ দৃশ্য দেখে অনেকেই নিজেদের মোবাইল ফোনে ধারণ করেন এবং ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এর ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওগুলো দেখে অনেকেই আঁতকে উঠছেন, কারণ এর ঘূর্ণি গতিপথ ছিল অত্যন্ত তীব্র।
প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো ধরনের প্রাণহানি বা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। এটি নিঃসন্দেহে একটি বড় স্বস্তির খবর, কারণ টর্নেডো তার বিধ্বংসী ক্ষমতার জন্য পরিচিত।
টর্নেডোর দৃশ্য দেখে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন, যা স্বাভাবিক। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে মানুষের অসহায়ত্ব স্পষ্ট হয়ে ওঠে। স্থানীয়রা জানান, টর্নেডোর ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য গ্রামের বাসিন্দারা তাৎক্ষণিকভাবে আজান দিয়েছেন এবং মহান আল্লাহর কাছে মোনাজাত করেছেন। তাঁদের এই সম্মিলিত প্রার্থনা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে মানুষের অদম্য বিশ্বাস ও ঐক্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
দীর্ঘ এক যুগ পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় টর্নেডোর এই পুনরাঘাত স্থানীয়দের মনে আবারও পুরনো স্মৃতির পাশাপাশি এক অজানা আতঙ্ক তৈরি করেছে। যদিও এবার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম, তবুও প্রকৃতির এই আকস্মিক রুদ্ররূপ সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। আমরা আশা করি, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষ দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে এবং ভবিষ্যতে এমন দুর্যোগ মোকাবেলায় আরও সচেতন ও প্রস্তুত থাকবে। সকলের নিরাপত্তা ও সুস্থ জীবন কামনা করছি।
—



