সম্প্রতি দেশের রাজনীতিতে জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান এবং তাদের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিয়ে কূটনৈতিক মহলে কৌতূহল বাড়ছে। এমন এক প্রেক্ষাপটে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন যে, জামায়াত কোনো বিদেশি শক্তির হাত ধরে ক্ষমতায় যেতে চায় না, বরং জনগণের ম্যান্ডেটেই বিশ্বাসী।
সোমবার (৬ অক্টোবর) তুরস্কের ফরেন অ্যাফেয়ার্সের ডেপুটি মিনিস্টার এ. বরিস একিঞ্চির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলের সাথে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের বৈঠকের পর গোলাম পরওয়ার এই মন্তব্য করেন। কূটনৈতিক মহলে জামায়াতের বিষয়ে আগ্রহ বৃদ্ধি পেলেও, তাদের এই বক্তব্য দলটির নিজস্ব নীতি ও ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পথরেখা সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট বার্তা দেয়।
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের কার্যালয়ে তুরস্কের উচ্চপদস্থ প্রতিনিধি দলের সাথে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বেশ কয়েকটি বিষয় উঠে আসে। গোলাম পরওয়ার জানান, জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান তুরস্কের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করেছেন যে, বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দল যদি সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছায়, তাহলে দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব। এই মন্তব্য দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নির্বাচনকালীন সরকারের ভূমিকার গুরুত্বের উপর জোর দেয়।
একই সাথে, ফিলিস্তিনের নিপীড়িত মানুষের জন্য তুরস্কের প্রেসিডেন্টের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন জামায়াত আমির। এটি মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি এবং আন্তর্জাতিক মুসলিম উম্মাহর প্রতি জামায়াতের সংহতির পরিচায়ক।
ক্ষমতায় আসার পর তাদের ভূমিকা কেমন হবে, সে সম্পর্কেও গোলাম পরওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “রাষ্ট্রের দায়িত্ব আসলে জামায়াত শাসক হবে না, জনগণের সেবক হবে।” এই বক্তব্য দলটির গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং জনগণের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতির উপর জোর দেয়। এটি এমন একটি দর্শন যা তাদের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক যাত্রায় সবসময়ই উচ্চারিত হয়েছে, যেখানে তারা নিজেদেরকে জনগণের খিদমতগার হিসেবে উপস্থাপন করতে চায়।
মিয়া গোলাম পরওয়ারের এই মন্তব্য এবং তুরস্কের প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠক দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে জামায়াতে ইসলামীর বর্তমান অবস্থান এবং ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা সম্পর্কে একটি স্পষ্ট চিত্র তুলে ধরে। বিদেশি হস্তক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করে জনগণের ম্যান্ডেটের উপর নির্ভরতা এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় সেবকের ভূমিকা পালনের অঙ্গীকার – এগুলি তাদের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থার মূল ভিত্তি। দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই বক্তব্যগুলির প্রভাব সুদূরপ্রসারী হতে পারে।
—


