## প্রথম বৈঠক: বিভেদ ভুলে একে অপরের প্রশংসা করলেন ট্রাম্প-মামদানি
**প্রকাশ্যে রাজনৈতিক বিরোধের দুই মাস পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নিউইয়র্ক শহরের নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানির মধ্যে বৈঠক হয়েছে। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) হোয়াইট হাউসে নিজেদের প্রথম সরাসরি বৈঠকে তারা একে অপরের প্রশংসা করেন, ছিলেন হাস্যোজ্জ্বল। এ সময় মামদানি নিউইয়র্ক শহরের অপরাধ দমন ও জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ন্ত্রণে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করারও প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।**
সাধারণত রাজনৈতিক মঞ্চে তাদের সম্পর্কটা ছিল বৈরী। একে অপরের কড়া সমালোচনায় মুখর থাকতেন তারা। কিন্তু সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এক ঘটনা যেন সেই ধারণা পাল্টে দিয়েছে। প্রকাশ্যে রাজনৈতিক বিরোধের দুই মাস পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নিউইয়র্ক শহরের নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানির মধ্যে হোয়াইট হাউসে এক ঐতিহাসিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) নিজেদের প্রথম সরাসরি বৈঠকে তারা শুধু হাসিমুখেই ছিলেন না, বরং একে অপরের প্রশংসাও করেছেন! এই অপ্রত্যাশিত উষ্ণ অভ্যর্থনা এবং সহযোগিতার অঙ্গীকার নিউইয়র্কের ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
**অপ্রত্যাশিত সাক্ষাৎ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ**
রাজনৈতিক মঞ্চে ট্রাম্প ও মামদানির মধ্যেকার তীব্র বাকযুদ্ধ ছিল নিয়মিত ঘটনা। বিশেষ করে গত দুই মাস ধরে তাদের রাজনৈতিক বিরোধ ছিল তুঙ্গে। এমন পরিস্থিতিতে, ২১শে নভেম্বরের শুক্রবারের হোয়াইট হাউসের এই বৈঠকটি ছিল অপ্রত্যাশিত এবং কৌতূহলোদ্দীপক। এটি ছিল ট্রাম্প ও মামদানির প্রথম সরাসরি সাক্ষাৎ। সারা দেশের নজর ছিল এই বৈঠকের দিকে, কারণ অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন যে এখানেও বিতর্কের আগুন জ্বলবে। তবে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বৈঠক কক্ষ থেকে বের হয়ে আসা ছবি ও সংবাদ সবাইকে চমকে দিয়েছে। ক্যামেরার সামনে ট্রাম্প ও মামদানি ছিলেন হাস্যোজ্জ্বল, তাদের মুখে ছিল পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের ছাপ, যা অতীতের সব তিক্ততাকে পেছনে ফেলে দিয়েছে।
**প্রশংসা ও ইতিবাচক মনোভাব**
বৈঠকের পর গণমাধ্যমের সামনে ট্রাম্প ও মামদানি একে অপরের কাজের প্রশংসা করতেও পিছপা হননি। ট্রাম্প, মামদানির শহরের প্রতি ভাবনা এবং জনকল্যাণমূলক কাজের প্রশংসা করেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, মামদানিও ট্রাম্পের কিছু উদ্যোগের গঠনমূলক দিক তুলে ধরে ইতিবাচক মনোভাব দেখান। এই দৃশ্য স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক মহলে এক নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই বলছেন, এটিই সুস্থ রাজনীতির উদাহরণ যেখানে ব্যক্তিগত বা দলীয় বিভেদ ভুলে জনস্বার্থে একসঙ্গে কাজ করার পথ খোলা থাকে।
**নিউইয়র্কের জন্য সহযোগিতার অঙ্গীকার**
বৈঠকে শুধু পারস্পরিক প্রশংসাই নয়, নিউইয়র্ক শহরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে সহযোগিতার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করা হয়েছে। মেয়র-নির্বাচিত মামদানি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তিনি নিউইয়র্ক শহরের অপরাধ দমন এবং জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ন্ত্রণে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। এই দুটি বিষয়ই নিউইয়র্কবাসীর কাছে অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং গুরুত্বপূর্ণ। অপরাধ বৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয়, এই দুটি সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে নিউইয়র্কবাসীকে ভোগাচ্ছে। প্রশাসনিক কাজে রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে একসঙ্গে কাজ করার এই মানসিকতা শহরবাসীর জন্য আশার আলো দেখাচ্ছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, জনসেবার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক মতাদর্শের চেয়ে বাস্তব সমস্যা সমাধানে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
**ভবিষ্যতের পথ**
এই প্রথম বৈঠকটি প্রমাণ করে দিল যে, রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকলেও জনকল্যাণের স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করা সম্ভব। ট্রাম্প ও মামদানির এই সৌহার্দ্যপূর্ণ সাক্ষাৎ ভবিষ্যতে ইউএস রাজনীতিতে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে। বিশেষ করে নিউইয়র্কের মতো একটি বৃহৎ ও বৈচিত্র্যপূর্ণ শহরে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে তাদের যৌথ প্রচেষ্টা অত্যন্ত জরুরি। এখন দেখার বিষয়, এই ইতিবাচক সূচনা ভবিষ্যতে কতটা কার্যকর হয় এবং নিউইয়র্কবাসীর জন্য কতটা সুফল বয়ে আনে।


