ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বুলডোজার আটকে দিলো সেনাবাহিনী**
আজ সোমবার দুপুরে এক নাটকীয় দৃশ্যের অবতারণা হলো ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে। দুটি বুলডোজার ঐতিহাসিক এই স্থানে প্রবেশের চেষ্টা করলে সেনাবাহিনী তাদের রুখে দেয়। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী এ ধরনের কাজের কোনো সুযোগ নেই এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখাই তাদের মূল লক্ষ্য।
**ঘটনার বিস্তারিত**
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। ট্রাকে করে বুলডোজার দুটি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের দিকে নিয়ে আসা হচ্ছিল। এ সময় বুলডোজারের ওপর কিছু তরুণকে স্লোগান দিতে দেখা যায়, যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তোলে। এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয় সেনাবাহিনী। এরপরই ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এলাকা ঘিরে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয় এবং বুলডোজারগুলোকে থামিয়ে দেওয়া হয়। সেনাবাহিনীর এই ত্বরিত পদক্ষেপ পরিস্থিতিকে আপাতত শান্ত করেছে।
**সেনাবাহিনীর কঠোর অবস্থান**
সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশের প্রচলিত আইন ও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে এমন কোনো বিধ্বংসী কার্যক্রমের অনুমতি দেওয়া হবে না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হয় এমন যেকোনো প্রচেষ্টা কঠোরভাবে দমন করা হবে। একটি সংবেদনশীল ও ঐতিহাসিক স্থাপনায় এ ধরনের কার্যকলাপ দেশের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ, তাই সেনাবাহিনী তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে বদ্ধপরিকর।
**উস্কানিদাতার বক্তব্য ও উদ্দেশ্য**
ঘটনার পেছনে ‘জুলাই স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ’ নামের একটি সংগঠনের আহ্বায়ক নাহিদ হাসানকে কথা বলতে দেখা যায়। তিনি নিজেকে এই সংগঠনের আহ্বায়ক পরিচয় দিয়ে জানান, “যেবার প্রথম শেখ হাসিনা বক্তব্য দেয় পালিয়ে যাওয়ার পর, সেবার আমরা প্রথম ধানমন্ডি ৩২ ভেঙেছিলাম। তখন নিশ্চিহ্ন করতে পারিনি। আজকে যেহেতু শেখ হাসিনার রায়, আজকের রায়ের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের রাজনীতি আমরা আশা করছি ধূলিসাৎ হয়ে যাবে।” তার এই উক্তি ঘটনার উদ্দেশ্য নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে এবং এর পেছনে একটি সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক এজেন্ডা থাকার ইঙ্গিত দিয়েছে।
**পুনরাবৃত্তিমূলক আক্রমণের ইতিহাস**
উল্লেখ্য, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের এই বাড়িটি ভাঙার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টার দিকেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। সেদিন একটি বুলডোজার ও একটি এক্সকাভেটর এসে বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেয়। বারবার এই ঐতিহাসিক স্থাপনাকে টার্গেট করা হচ্ছে, যা দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য উদ্বেগজনক।
**উপসংহার**
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের মতো একটি সংবেদনশীল স্থানে এ ধরনের উত্তেজনাপূর্ণ ঘটনা জনমনে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সময়োচিত পদক্ষেপ পরিস্থিতিকে আপাতত শান্ত করতে পারলেও, এর পেছনের উদ্দেশ্য এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। সকলের উচিত দেশের আইন ও শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সচেষ্ট থাকা এবং কোনো ধরনের উস্কানিতে কান না দেওয়া।
—


