## দল যাকে মনোনয়ন দিয়েছে তার পক্ষে কাজ করার আহ্বান আমিনুল হকের
দেশের রাজনীতিতে দলীয় ঐক্য ও সংহতি সব সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিশেষ করে যখন নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ে বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তৈরি হয়, তখন দলের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ও মনোনীত প্রার্থীর প্রতি আনুগত্য ধরে রাখা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়ে। এই প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর একজন প্রবীণ ও প্রভাবশালী নেতা, সাবেক সংসদ সদস্য জনাব আমিনুল হকের একটি আহ্বান দলীয় অঙ্গনে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি স্পষ্ট ভাষায় আহ্বান জানিয়েছেন যে, দল যাকে মনোনয়ন দিয়েছে, তার পক্ষেই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
**কেন এই আহ্বান?**
আমিনুল হকের এই আহ্বান বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোতে প্রায়শই দেখা যায় যে, মনোনয়নকে ঘিরে বিভিন্ন আসনে একাধিক প্রার্থীর মধ্যে এক ধরনের টানাপোড়েন তৈরি হয়। অনেক সময় পছন্দের প্রার্থী মনোনয়ন না পাওয়ায় কিছু নেতাকর্মী নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন বা ভিন্ন পথে হাঁটার চেষ্টা করেন। এর ফলে দলের সামগ্রিক শক্তি খর্ব হয় এবং প্রতিপক্ষ সুবিধা পায়। এই ধরনের বিভেদ ভুলে গিয়ে একটি সুসংগঠিত শক্তি হিসেবে কাজ করার গুরুত্ব তুলে ধরতেই আমিনুল হক এই আহ্বান জানিয়েছেন।
**আমিনুল হকের বার্তা: ঐক্যের অপরিহার্যতা**
তার বক্তব্যে আমিনুল হক জোর দিয়ে বলেছেন, দল একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া ও আলোচনার মাধ্যমে প্রার্থী চূড়ান্ত করে। যখন দল একজনকে মনোনীত করে, তখন সেই সিদ্ধান্তকে সকল কর্মীর মেনে নেওয়া উচিত। তিনি মনে করিয়ে দেন যে, দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত এবং ব্যক্তির পছন্দের চেয়ে দলের বৃহত্তর স্বার্থকে ঊর্ধ্বে রাখতে হবে। তার ভাষায়, “আমাদের সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে, দল যাকে যোগ্য মনে করেছে, তার পাশে দাঁড়াতে হবে। দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত এবং এর প্রতি সকলের সম্মান প্রদর্শন করা উচিত।”
তিনি আরও বলেন, “একসাথে কাজ করার মাধ্যমেই দলের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। আমরা যদি ছোটখাটো বিভেদে জড়িয়ে পড়ি, তাহলে মূল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হবো এবং দলের ক্ষতি হবে।” এই কথাগুলোর মধ্য দিয়ে তিনি দলীয় শৃঙ্খলার গুরুত্ব এবং সম্মিলিত শক্তির প্রয়োজনীয়তাকেই তুলে ধরেন।
**দলের স্বার্থে ঐক্যের গুরুত্ব**
রাজনৈতিক দলগুলোর সাফল্যের জন্য অভ্যন্তরীণ ঐক্য এবং সংহতি অপরিহার্য। যখন একটি দল ঐক্যবদ্ধ থাকে, তখন তার কর্মীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়ে, বার্তা স্পষ্টভাবে জনগণের কাছে পৌঁছায় এবং প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা করা সহজ হয়। অন্যদিকে, অভ্যন্তরীণ কোন্দল বা বিভেদ দলের শক্তিকে ক্ষয় করে, কর্মীদের মনোবল ভেঙে দেয় এবং জনসমর্থন হারানোর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
আমিনুল হকের এই আহ্বান মূলত দলের কর্মীদের মধ্যে শৃঙ্খলা ও সংহতি ফিরিয়ে আনার একটি প্রচেষ্টা। এটি নিশ্চিত করবে যে, দলের প্রতিটি সদস্য একটি অভিন্ন লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যা সামগ্রিকভাবে দলের সাফল্য এনে দেবে। আসন্ন যেকোনো রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ বা নির্বাচনে জয়লাভের জন্য এই ঐক্যবদ্ধ শক্তিই হবে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।
**উপসংহার**
আমিনুল হকের এই আহ্বান শুধু একটি দলের জন্য নয়, বরং দেশের সামগ্রিক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্যও একটি ইতিবাচক বার্তা বহন করে। এটি মনে করিয়ে দেয় যে, ব্যক্তির চেয়ে দল বড় এবং দলের সিদ্ধান্তকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা আশা করি, তার এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে দলের সকল স্তরের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে এবং দলীয় সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে একটি শক্তিশালী ও গতিশীল রাজনৈতিক ধারা বজায় রাখবে। এটিই হবে দেশের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার এবং জনকল্যাণমূলক রাজনীতি প্রতিষ্ঠার মূল ভিত্তি।



