দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমশ উদ্বেগজনক হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার ফলে চলতি বছরে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১৫ জনে। একই সময়ে ৭৮২ জন নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ হাজার ৬৮৯ জনে পৌঁছেছে। সোমবার (৬ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় যে ৭৮২ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১৭৪ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৮৩ জন, ঢাকা বিভাগে ১৪৫ জন (যার মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ১১৮ জন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ৯০ জন), খুলনা বিভাগে ৫৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৫ জন, রাজশাহী বিভাগে ৬৪ জন, রংপুর বিভাগে ১১ জন ও সিলেট বিভাগে পাঁচজন রয়েছেন। এই পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যায়, ঢাকার বাইরেও ডেঙ্গুর প্রকোপ মারাত্মক রূপ নিয়েছে, বিশেষ করে বরিশাল, চট্টগ্রাম ও খুলনার মতো বিভাগগুলোতে।
গত ২৪ ঘণ্টায় যে ৩ জন মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে দুজন এবং খুলনা বিভাগে একজনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছর ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৫০ হাজার ৬৮৯ জন, যা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১৫ জনে।
এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অত্যন্ত জরুরি। ডেঙ্গু একটি মশাবাহিত রোগ, যা এডিস মশা দ্বারা ছড়ায়। এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করাই ডেঙ্গু প্রতিরোধের প্রধান উপায়।
বাড়ির আশেপাশে, ফুলের টবে, পরিত্যক্ত টায়ারে, ডাবের খোলায় বা যেকোনো পাত্রে জমে থাকা পরিষ্কার পানিতে এডিস মশা ডিম পাড়ে। তাই নিয়মিত এসব স্থান পরিষ্কার রাখুন এবং পানি জমতে দেবেন না।
কামড় থেকে বাঁচতে দিনে ও রাতে মশারির ব্যবহার, মশা তাড়ানোর স্প্রে বা লোশন ব্যবহার করা যেতে পারে।
পরিষ্রিপার্শ্বিক পরিচ্ছন্নতা ডেঙ্গু প্রতিরোধে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ডেঙ্গুর সাধারণ লক্ষণগুলো হলো তীব্র জ্বর, মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা, মাংসপেশী ও জয়েন্টে ব্যথা এবং ত্বকে ফুসকুড়ি। এসব লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। নিজে নিজে চিকিৎসা না করে সঠিক সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া জীবন বাঁচাতে পারে।
ডেঙ্গুর এই ভয়াবহ প্রকোপ মোকাবিলায় সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সচেতনতা ও অংশগ্রহণ অপরিহার্য। আসুন, আমরা সবাই মিলে আমাদের চারপাশ পরিষ্কার রাখি এবং ডেঙ্গুমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করি। আপনার সামান্য সচেতনতা বাঁচিয়ে দিতে পারে একটি মূল্যবান জীবন।


