## ট্রাম্পের অভিবাসীবিরোধী প্রচারণায় গান ব্যবহার করায় শিল্পীর ক্ষোভ
ডনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী নীতি এবং তার প্রশাসনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড নতুন কিছু নয়। তবে সম্প্রতি একটি ঘটনা নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে, যেখানে শিল্পীর অধিকার এবং রাজনৈতিক প্রচারণার নৈতিকতা প্রশ্নের মুখে। পপ তারকা সাবরিনা কার্পেন্টার তার একটি গান ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসনবিরোধী প্রচারণায় ব্যবহার করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
**ঘটনার সূত্রপাত**
আনাদোলু এজেন্সির খবরে জানা গেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন তারা অভিবাসনবিরোধী কঠোর পদক্ষেপের জন্য পরিচিত ছিল। এই পদক্ষেপগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান এবং তাদের আটক করা। সম্প্রতি, এমন একটি প্রচারণামূলক ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে, যা অভিবাসনবিরোধী কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করছিল এবং অবৈধ অভিবাসীদের আটক অভিযানে উৎসাহ দিচ্ছিল। আর এই ভিডিওটিতে ব্যবহার করা হয়েছে সাবরিনা কার্পেন্টারের জনপ্রিয় একটি গান, যা শিল্পীর অনুমতি ছাড়াই করা হয়েছিল।
**সাবরিনা কার্পেন্টারের প্রতিবাদ**
শিল্পীর অনুমতি ছাড়াই তার গান এমন একটি বিতর্কিত রাজনৈতিক প্রচারণায় ব্যবহার করা হয়েছে, যা সাবরিনাকে ভীষণ হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে। তিনি তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই বিষয়ে সরব হয়েছেন এবং ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর সমালোচনা করেছেন। সাবরিনা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি এই ধরনের নীতি বা প্রচারণার সঙ্গে কোনোভাবেই যুক্ত নন এবং এর ঘোর বিরোধী।
তিনি বলেছেন, একজন শিল্পী হিসেবে তার কাজ মানুষের মধ্যে ঐক্য ও ভালোবাসা তৈরি করা, বিভেদ নয়। আর তার গানকে এমন বিভেদ সৃষ্টিকারী কাজে ব্যবহার করা তার শিল্পীর সত্তার প্রতি চরম অসম্মান। সাবরিনা আরও উল্লেখ করেছেন যে, তার গানের মূল বার্তা শান্তি ও সম্প্রীতি, যা অভিবাসনবিরোধী হিংসাত্মক প্রচারণার সম্পূর্ণ বিপরীত। তার মতে, শিল্পকর্মের ভুল ব্যবহার শিল্পীর আদর্শ ও বিশ্বাসকে খাটো করে।
**ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়**
এই ঘটনা শুধু সাবরিনা কার্পেন্টারের ব্যক্তিগত ক্ষোভের বিষয় নয়, এটি শিল্পী ও রাজনৈতিক প্রচারণার মধ্যেকার সংবেদনশীল সম্পর্ককে তুলে ধরে। শিল্পীরা প্রায়শই তাদের কাজের মাধ্যমে একটি বার্তা দিতে চান, যা তাদের বিশ্বাস ও মূল্যবোধের প্রতিফলন। যখন তাদের অনুমতি ছাড়া বা তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদের শিল্পকর্মকে এমন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়, যা তাদের মূল্যবোধের পরিপন্থী, তখন তা শুধু কপিরাইট লঙ্ঘনের বিষয় থাকে না, এটি শিল্পীর নীতিগত অবস্থানের প্রতিও চরম আঘাত।
ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসননীতি বরাবরই বিতর্কিত ছিল এবং এই ঘটনায় সেই বিতর্ক আরও নতুন মাত্রা পেল। অনেক সমালোচক মনে করেন, এই ধরনের কাজ সাধারণ মানুষের মধ্যে ভুল বার্তা দিতে পারে এবং বিভেদকে আরও উসকে দিতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর শিল্পীদের অধিকার এবং তাদের কাজের মূল উদ্দেশ্যকে সম্মান জানানো উচিত বলেও মত প্রকাশ করছেন অনেকে।
**শেষ কথা**
সবশেষে বলা যায়, সাবরিনা কার্পেন্টারের এই প্রতিবাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। শিল্প ও রাজনৈতিক প্রচারণার মধ্যেকার সীমানা কোথায় হওয়া উচিত, তা এই ঘটনা আবারও মনে করিয়ে দেয়। আশা করা যায়, এই ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে শিল্পীদের অধিকার এবং তাদের কাজের মূল উদ্দেশ্যকে সম্মান জানানোর গুরুত্ব সম্পর্কে রাজনৈতিক দলগুলোকে আরও সচেতন করবে। শিল্পকে যখন রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তখন তা কেবল শিল্পীর স্বাধীনতাকেই ক্ষুণ্ন করে না, বরং সমাজের বৃহত্তর কল্যাণের জন্যও তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।



