## টঙ্গীতে ৫ দিনের জোড় ইজতেমা শুরু আজ: বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতিমূলক মহাযজ্ঞ
ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় সমাবেশ বিশ্ব ইজতেমার আগে টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে শুরু হচ্ছে পাঁচ দিনব্যাপী জোড় ইজতেমা। আজ (শুক্রবার) বাদ ফজর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে এই ইজতেমা শুরু হয়েছে। বিশ্ব ইজতেমার মূল পর্ব শুরুর আগে এটি এক ধরনের প্রস্তুতিমূলক সভা ও পরামর্শের মহাযজ্ঞ হিসেবে বিবেচিত হয়।
**জোড় ইজতেমা কী ও এর উদ্দেশ্য:**
অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে, বিশ্ব ইজতেমার আগে এই জোড় ইজতেমার প্রয়োজনীয়তা কী? মূলত, এই জোড় ইজতেমা বিশ্ব ইজতেমার মূল পর্ব শুরুর আগে তাবলিগ জামাতের শীর্ষস্থানীয় মুরব্বি, আলেম-ওলামা এবং শুরা সদস্যদের জন্য একটি বিশেষ সমাবেশ। এখানে দেশ-বিদেশ থেকে আগত তাবলিগ জামাতের কর্মীরা একত্রিত হন। এর প্রধান উদ্দেশ্যগুলো হলো:
* **পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা:** বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক ব্যবস্থাপনা, শৃঙ্খলা এবং সফলতার জন্য বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরামর্শ গ্রহণ করা হয়।
* **দায়িত্ব বন্টন:** ইজতেমায় আগত লাখ লাখ মুসল্লির সেবায় নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবক ও কর্মীদের মধ্যে কাজ বন্টন এবং তাদের জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়।
* **দ্বীনি শিক্ষা ও তালিম:** অংশগ্রহণকারীরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সাথে আদায় করেন, বয়ান শোনেন, দ্বীনি তালিম গ্রহণ করেন এবং আত্মিক উন্নতির চেষ্টা করেন।
* **কর্মপন্থা নির্ধারণ:** ইসলামের প্রচার ও প্রসারে তাবলিগ জামাতের কর্মপন্থা ও কার্যক্রম নিয়েও এখানে গভীর আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
**কারা অংশ নেন?**
এই জোড় ইজতেমায় মূলত দেশ-বিদেশের তাবলিগ জামাতের ওলামায়ে কেরাম, শুরা সদস্য, কাকরাইলের মুরব্বি এবং বিভিন্ন জেলা থেকে নির্বাচিত ফিকিরধারী দ্বীনি ভাইয়েরা অংশ নেন। বিশেষ করে যারা আগামীতে বিশ্ব ইজতেমায় বিদেশি মেহমানদের দেখাশোনা, নিরাপত্তা ও সেবায় নিয়োজিত থাকবেন, তাদের জন্য এখানে বিশেষ প্রশিক্ষণ ও দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়।
**ইজতেমা ময়দানে প্রস্তুতি:**
জোড় ইজতেমার জন্য ইজতেমা ময়দানে ইতোমধ্যেই সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আগত মুসল্লিদের জন্য ইজতেমা মাঠের প্যান্ডেল তৈরি, ওজু ও গোসলের সুব্যবস্থা, পর্যাপ্ত টয়লেট স্থাপন, বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং স্বাস্থ্যসেবার জন্যও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন।
**গুরুত্ব ও প্রত্যাশা:**
জোড় ইজতেমাকে বিশ্ব ইজতেমার প্রাণ হিসেবে ধরা হয়। এর মাধ্যমে আগামী বৃহৎ সমাবেশের ভিত্তি সুদৃঢ় হয় এবং অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে দ্বীনি উদ্দীপনা ও পারস্পরিক সংহতি বৃদ্ধি পায়। পাঁচ দিনব্যাপী এই ইজতেমায় অনুষ্ঠিত বয়ান ও পরামর্শগুলো বিশ্ব ইজতেমার সফলতার পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়।
আমরা আশা করি, এই পাঁচ দিনব্যাপী জোড় ইজতেমা সফলভাবে সম্পন্ন হবে এবং এর মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে দ্বীনি চেতনা আরও বিকশিত হবে। মহান আল্লাহ তায়ালা এই মহতী আয়োজনকে কবুল করুন।



