গাজা উপত্যকায় যখন মানবিক বিপর্যয় চরমে, খাবার, পানি, ওষুধ ও জ্বালানির অভাবে ধুঁকছে হাজার হাজার মানুষ, ঠিক তখনই আশার আলো দেখাচ্ছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি জানিয়েছে, গাজায় ত্রাণ সহায়তা পাঠানোর জন্য তাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন। তবে এই আশার আলো বাস্তবে রূপ নিতে পারছে না কেবল একটি কারণে: সীমান্ত প্রবেশপথগুলো অবরুদ্ধ। জাতিসংঘ জরুরি ভিত্তিতে প্রবেশপথগুলো খুলে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক সমন্বয় কার্যালয় (OCHA) স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, গাজায় ত্রাণ পৌঁছানোর জন্য তাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন। চরম ঝুঁকিতে থাকা মানুষের জীবন বাঁচাতে অতি প্রয়োজনীয় খাদ্য, ওষুধ, পানি এবং জ্বালানিসহ জীবন রক্ষাকারী সামগ্রীগুলো পাঠানোর জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এই পণ্যগুলো মজুত করা হয়েছে এবং বিতরণের জন্য লজিস্টিক পরিকল্পনাও তৈরি। কিন্তু অবরুদ্ধ এই অঞ্চলে প্রবেশের সুযোগ না থাকায় ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না, যা হাজার হাজার দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের জীবনকে আরও সংকটাপন্ন করে তুলছে।
গাজা উপত্যকা বর্তমানে এক নজিরবিহীন সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সংঘাত, অবরোধ এবং অবকাঠামোগত ক্ষতির কারণে সেখানকার মানুষ মৌলিক চাহিদা পূরণে হিমশিম খাচ্ছে। হাসপাতালগুলো ধসে পড়ার উপক্রম, বিশুদ্ধ পানির অভাব চরমে, এবং খাদ্যের সরবরাহ এতটাই কম যে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, জাতিসংঘের আহ্বান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সংস্থাটি সকল পক্ষকে মানবিক করিডোর (Humanitarian Corridor) চালু করার আহ্বান জানিয়েছে। এর উদ্দেশ্য হলো, দ্রুত এবং নিরাপদে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের কাছে খাদ্য, পানীয়, চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং অন্যান্য জরুরি সহায়তা পৌঁছে দেওয়া। জাতিসংঘ জোর দিয়ে বলেছে, এই মুহূর্তে প্রতিটি মিনিট মূল্যবান। সময় নষ্ট না করে অবিলম্বে এই করিডোরগুলো চালু করা না গেলে মানবিক পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে এবং অগণিত মানুষের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়বে।
জাতিসংঘ বারবার স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, তাদের প্রস্তুতি সম্পূর্ণ। এখন শুধু প্রয়োজন প্রবেশপথগুলো খুলে দেওয়া এবং মানবিকতার খাতিরে সকল বাধা দূর করা। এই মুহূর্তে, গাজার বেসামরিক নাগরিকদের জীবন বাঁচানোই সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে দ্রুত এই আহ্বানে সাড়া দিতে হবে, যাতে মানবিক সহায়তা বিনা বাধায় গাজার প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছাতে পারে। গাজার অসহায় মানুষের জীবন বাঁচাতে সম্মিলিত পদক্ষেপই পারে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে মুক্তির পথ দেখাতে – এই প্রত্যাশা সকলের।



