## আমীর খসরু বলেছেন, সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোট হলে তাতে বিএনপির আপত্তি নেই
**শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রামের এক সেমিনারে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় বিএনপির প্রবীণ নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং নির্বাচন, গণভোট ও বিচার ব্যবস্থা নিয়ে দলের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি বলেছেন যে, যদি সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে তাতে বিএনপির কোনো আপত্তি থাকবে না।**
চট্টগ্রাম নগরীতে ট্রাভেল ফোরাম আয়োজিত একটি সেমিনারে যোগদানের পর সাংবাদিকদের সাথে সমসাময়িক বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এই গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন। তার এই বক্তব্য রাজনৈতিক মহলে এক নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে, যেখানে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন জল্পনা-কল্পনা চলছিল।
### একইদিনে নির্বাচন ও গণভোট: অযথা সময় নষ্ট নয়
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জোর দিয়ে বলেছেন যে, একইদিনে নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনের সরকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে অহেতুক তর্ক-বিতর্ক করে সময় নষ্ট করার প্রয়োজন নেই। তিনি সকলের প্রতি এই বিষয়ে গঠনমূলক আলোচনার আহ্বান জানান। তার এই অবস্থান থেকে বোঝা যায় যে, বিএনপি সরকার কর্তৃক একই দিনে দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া আয়োজনের সম্ভাবনাকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত, যদি তা স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে হয়। এটি তাদের দীর্ঘদিনের দাবি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের প্রশ্নে একটি নমনীয় অবস্থান হিসেবেও দেখা যেতে পারে।
### নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের তাগিদ
বিএনপির এই নেতা দেশের ক্ষমতা ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত একটি সরকারের হাতে তুলে দেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন যে, জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে এমন একটি সরকারের কাছেই ক্ষমতা হস্তান্তর করা উচিত। এটি একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার মূল ভিত্তি, যেখানে জনগণের ম্যান্ডেটই সরকার গঠনের একমাত্র বৈধ পথ। আমীর খসরুর এই অবস্থান গণতন্ত্রের প্রতি তাদের দলের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে এবং দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থার প্রেক্ষাপটে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরে।
### নিরপেক্ষ বিচার বিভাগ ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার রায়
বিচার বিভাগ প্রসঙ্গে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী মন্তব্য করেছেন যে, বর্তমানে দেশে একটি নিরপেক্ষ বিচার বিভাগ বিদ্যমান রয়েছে। তার মতে, ‘জুলাই গণহত্যা’র দায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায়ের বিষয়টি সম্পূর্ণ বিচার বিভাগই দেখবে। এই মন্তব্যটি বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এটি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং নিরপেক্ষতার উপর আস্থা রাখার ইঙ্গিত দেয়। এটি ইঙ্গিত করে যে, বিএনপি বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রাপ্তির সম্ভাবনা দেখছে, যা দেশের বিচার ব্যবস্থার উপর জনগণের আস্থাকে শক্তিশালী করতে পারে।
সব মিলিয়ে, চট্টগ্রাম থেকে আসা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর এই বক্তব্যগুলো দেশের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। নির্বাচন, গণভোট, এবং বিচার বিভাগ—এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিএনপির অবস্থান তিনি পরিষ্কার করেছেন। তার এই মন্তব্যগুলো আগামী দিনের রাজনৈতিক আলোচনা ও সিদ্ধান্তের উপর নিঃসন্দেহে প্রভাব ফেলবে এবং দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।



